বিএফডিসি ও প্রযোজকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে অভিনেতা পীরজাদা শহীদুল হারুনকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি।
এ ছাড়া গতকাল ২৫ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা তাঁকে আলটিমেটাম দিয়েছেন। তিন দিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে হারুনকে, নইলে এফডিসিতে অবাঞ্ছিত করার পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পীরজাদা হারুন বলেন, ‘একসময় এফডিসি থেকে অভিনেতা রাজীবকে সরিয়ে অতিরিক্ত সচিবকে এমডির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি এফডিসি সম্পর্কে অবগত না থাকায় দেখভালের জন্য আমাকে দায়িত্ব দেন। তখন দেখি, ১২০টি রুম আছে বিভিন্ন প্রযোজকের নামে। সেখানে মাদক, নারী ব্যবসাসহ অনেক কিছুই হতো। এমডিকে অবগত করে তখন রুমগুলো দখলমুক্ত করি। এখন আবার সেই রুমগুলো দখল হয়েছে। এগুলো বন্ধ করা দরকার।’
এমন বক্তব্যের কারণে গত শনিবার পীরজাদা হারুনকে বয়কটের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি। প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল এফডিসিতে সংবাদ সম্মেলন করে চলচ্চিত্র-সংশ্লিস্ট সংগঠনগুলো।
সংবাদ সম্মেলনে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন বলেন, ‘প্রযোজকেরা সিনেমায় লগ্নি করছেন বলেই এতগুলো মানুষ কাজ করতে পারে। সেই প্রযোজকদের যদি ঢালাওভাবে বলা হয় এফডিসিতে তাঁরা নেশা করেন, নারীসঙ্গ করেন—এটা নিন্দনীয় ও লজ্জার। আজ যদি এই কথার প্রতিবাদ না করি তাহলে পুরো দেশবাসীর কাছে আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।’
শিল্পী সমিতির সহসভাপতি ডি এ তায়েব বলেন, ‘পীরজাদা হারুনের কথা শুনে খুব ব্যথিত হয়েছি, কষ্ট পেয়েছি। তিনি শাস্তি পাওয়ার মতো মন্তব্য করেছেন।’
ফিল্ম ক্লাবের সভাপতি ও প্রযোজক সামসুল আলম বলেন, ‘৪০ বছরের ক্যারিয়ারে আমি কখনো দেখিনি এখানে প্রযোজকদের জন্য ১২০টি রুম আছে। তাঁকে অনুরোধ করব, এফডিসিতে এসে তাঁর কথার প্রমাণ তিনি দিয়ে যাবেন। উনি চলচ্চিত্রের সংগঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আগামী তিন দিনের মধ্যে তিনি এসে প্রকাশ্যে সবার কাছে ক্ষমা না চাইলে তাঁকে এফডিসিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে। তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে।’
পরিচালক সমিতির বয়কট ও তিন দিনের আলটিমেটাম প্রসঙ্গে পীরজাদা হারুন জানান, বয়কট ও অবাঞ্ছিত নিয়ে চিন্তিত নন তিনি। হারুন বলেন, ‘আমি কোনো মিথ্যা কথা বলিনি। সেই সময়ের ফাইল দেখলেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এ ছাড়া শিল্পী সমিতির নির্বাচনের সময়েও মদ খেয়ে উল্লাস করার খবর প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। আমি বলিনি সবাই এর সঙ্গে জড়িত। চলচ্চিত্রের ভালোর জন্যই আমি বলেছি, এই সমস্ত কর্মকাণ্ড থেকে এফডিসিকে মুক্ত করা দরকার। আর বয়কট নিয়ে ভাবছি না, কারণ গত জুলাই মাসে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, চলচ্চিত্রে আর কাজ করব না।’