কেবল আগস্ট মাসে ছড়ানো ৭০টি গুজবে সূত্র হিসেবে ভিত্তিহীনভাবে গণমাধ্যমের নাম জড়ানো হয়েছে।
এর সিংহভাগই গণমাধ্যমের ভুয়া ফটোকার্ড। গেলো আগস্টে বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেকিংয়ের ইতিহাসে একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ ৩৭০টি গুজব শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। তারা বলছে, আগস্টে গুজবের ব্যাপ্তি এতোটাই বেশি ছিল যে তা মোকাবিলায় ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে হিমশিম খেতে হয়েছে।
হঠাৎ এত গুজব ছড়াচ্ছে কারা জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে ৯৩টি গুজব পাওয়া গেছে। যার বেশিরভাগের উৎপত্তি আওয়ামী লীগ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অফিসিয়াল ও সমর্থিত ফেসবুক গ্রুপ, পেজ এবং অ্যাকাউন্ট থেকে।
২০২৪ সালের প্রথম সাত মাসে গড়ে প্রতিমাসে ২০০ গুজব শনাক্ত করলেও অষ্টম মাসে তা ঝড়ের গতিতে বৃদ্ধি পায়। এই মাসে রিউমর স্ক্যানার ৩৭০টি গুজব শনাক্ত করে। যেখানে বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে ১৮টি ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ পাওয়া যায়।
অগাস্ট মাসে বন্যা নিয়ে ৬৭টি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে ১৪টি ও বাংলাদেশ পুলিশকে জড়িয়ে ১১টি গুজব পাওয়া গেছে। ব্যক্তি কেন্দ্রিক গুজবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জড়িয়ে সর্বোচ্চ ২০টি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে ১৬টি, সমন্বয়ক সারজিস আলমকে জড়িয়ে ১১টি, সাবেক এমপি ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ৫টি গুজব পাওয়া গেছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে জড়িয়েও গুজব চিহ্নিত হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের হেড অব অপারেশন সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতার পটপরিবর্তন এবং স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা আগস্ট মাসে গুজবের ব্যাপকতার অন্যতম কারণ। এই মাসে গুজবের ব্যাপ্তি এতোটাই বেশি ছিল যে তা মোকাবিলায় ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে হিমশিম খেতে হয়েছে। গুজবের মধ্যে পুরোনো ও বিকৃত ছবি-ভিডিও, গণমাধ্যমের ভুয়া সূত্র, ফটোকার্ড এবং মন্তব্যকেন্দ্রিক বিষয়ের আধিক্য পরিলক্ষিত হয়েছে।