ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় ৫ দিন আগে ডিম, ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির দাম বেধে দিয়েছিল প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। তবে বেঁধে দেয়া দামে মুরগি বিক্রি হলেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম।
সরেজমিনে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর মোহাম্মদ টাউন হল কাঁচা বাজারে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
এদিন প্রতি কেজি সোনালী মুরগি ২৭০টাকা, ব্রয়লার ১৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, দেশী হাঁস ৬৫০ ও কবুতর প্রতি পিস ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। যেখানে প্রতি কেজি সোনালী মুরগি ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা এবং ব্রয়লার মুরগি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার।
তবে ডিম বাড়তি দামে বিক্রি হতে দেখা যায়। সরকার ডিম খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ১১ টাকা ৮৭ পয়সা দরে নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হচ্ছিলো ৫৫ টাকা প্রতি হালি। সে হিসেবে প্রতি পিসের দাম পড়ে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা।
সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করছেন না কেন জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডিম বিক্রেতা বলেন, ‘আমরা ডিম কিনে আনি ১২ টাকা ৭০/৮০ পয়সায়। তাহলে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করবো কিভাবে? সরকার নির্ধারণ করে দিলেই তো হইলো না। যদি পাইকারি দাম না কমে। আমরা আড়ত থেকে যে দামে কিনে আনি, সেখান থেকে কিছুটা বাড়িয়ে বিক্রি করি। আড়তে কমলে আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারবো।’
মুরগির দাম স্থিতিশীল থাকবে কি না জানতে চাইলে মুরগি বিক্রেতা বলেন, মুরগির দাম কমেনি। আগের দামেই বিক্রি করছি। গত সপ্তাহেও দাম একই ছিল। তবে সামনে বাড়বে এমন কথা শুনতেছি। দাম আর কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এছাড়াও প্রতি কেজি বেগুন ১০০ টাকা, সিম ২০০ টাকা, দেশী শসা ৮০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেড়স ৮০ টাকা ও কাকরল ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়।
রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী এই বাজারে লাউ প্রতি পিস ৬০টাকা, পাতা কপি প্রতি পিস ৭০ টাকা ও মাঝারি সাইজের লেবুর হালি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অপরিবর্তিত ছিল পেয়াজ ও আলুর দাম। মানভেদে প্রতি কেজি পেয়াজ ১১৫ থেকে ১২৫ টাকা, আলু ৬০ টাকা, আদা ৩০০ টাকা ও রসুন ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের এমন উর্ধ্বমুখীতায় বাজার করতে এসে অনেক মানুষকেই হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায়। সিন্ডিকেটের অবসান ও স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পতনের পরেও জিনিসপত্রের দাম না কমায় দেখা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।
তেমনই একজন মধ্যবয়সী আহমেদ হোসেন। তরতাজা সবজি নিতে সকাল সকাল চলে আসছেন ছেলেকে নিয়ে বাজার করতে। বাঁধা কপি নিয়ে দোকানদারের সঙ্গে দাম-দর করছিলেন। ২ পিস বাঁধা কপি প্রথমে ১৬০ টাকা দাম হাকালেও ১৪০ টাকার নিচে বিক্রি করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন দোকানদার। আহমেদ হোসেন প্রথমে ১২০ ও পরে ১৩০ টাকা দিতে চাইলেও দোকানদারের সাফ জবাব, ‘নিলে নিন, না নিলে নাই, আর কোন দামাদামি হবে না।’ পরে বাধ্য হয়ে এই দামেই কিনে নেন তিনি।