আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) বেশির ভাগ কর্মকর্তাই অফিসে আসছেন না।
তাঁদের অনুপস্থিতিতে এদিকে কয়েক দিন ধরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) শিক্ষার্থীরা রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. এ জেড এম মোস্তাক হোসেনের পদত্যাগের জন্য পদত্যাগপত্র লিখে তাঁর কার্যালয়ে যান। গত সোমবার দুপুরেও তাঁরা ভিসির কার্যালয়ে যান। তাঁকে না পেয়ে কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিনই ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির স্বাভাবিক কাজকর্মে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।
পদত্যাগ আলটিমেটামের মুখে পদত্যাগ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক তারিকুল হাসান। গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামাণিক বলেন, ‘রেজিস্ট্রার উপাচার্য বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন।’ এর আগে সোমবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা রেজিস্ট্রার তারিকুল হাসানকে পদত্যাগ করতে মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, গত ২৮ আগস্ট রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ডা. আনোয়ার হাবিবকে পদত্যাগে বাধ্য করেন। এর পর থেকে শঙ্কায় থাকা শীর্ষ কর্মকর্তারা অফিস করছেন না। উপাচার্য মোস্তাক হোসেন অফিসে আসেন না আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকেই। কর্মকর্তারা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে কাজে এসে ফিরে যাচ্ছেন। ৭ সেপ্টেম্বরের পরীক্ষা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে আসছেন না। তাঁরা ছুটিতে আছেন বলে কর্মচারীদের জানিয়েছেন।
গত সোমবার দুপুরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মেহেদী মাসুদ নামের একজন সেকশন অফিসার তাঁর কার্যালয় থেকে নেমে যাচ্ছেন। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হবে। ৭ সেপ্টেম্বর নার্সিং ইনস্টিটিউটের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজশাহীতে অস্থায়ী কার্যালয়ে এখন রামেবির কার্যক্রম চলছে। স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম চলছে। রামেবি স্থাপন প্রকল্পের পরিচালকও ছিলেন মোস্তাক হোসেন। যদিও বিধি অনুযায়ী তাঁর প্রকল্প পরিচালক হওয়ার সুযোগ ছিল না।