পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও দেশের বৃহত্তম ৫৩তম জশনে জুলুস শুরু হয়েছে চট্টগ্রামে। জুলুসে অংশ নিয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসর আলমগীর খানকা থেকে শুরু হবে এই জুলুসের কার্যক্রম।
এ বছর জুলুসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্। এতে উপস্থিত আছেন শাহজাদা আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ। শনিবার থেকে তারা চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। এ জুলুসের আয়োজক সংস্থা আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট এবং সার্বিক সহযোগিতা করে গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ।
গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও মানবিক কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন, ১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল থেকে চট্টগ্রামে প্রথম এ জশনে জুলুসের সূচনা হয়। প্রথম জুলুসটি গাউসে জামান আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ্ (রহ.)-এর দিকনির্দেশনায় নগরীর বলুয়ারদীঘি পাড় খানকাহ্ শরিফ থেকে আনজুমানের সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে এসে শেষ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ৫৩তম জুলুস হবে।
তিনি আরও বলেন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জশনে জুলুস ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়বিয়া থেকে সকাল ৮টায় শুরু হবে। সেখান থেকে শুরু হয়ে বিবিরহাট (বামে মোড়)-মুরাদপুর (ডানে মোড়)-ষোলশহর-২ নম্বর গেইট-জিইসি মোড় (ডানে মোড়)-পুনরায় ২ নম্বর গেট-ষোলশহর-মুরাদপুর-বিবিরহাট-জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে জমায়েত হবে। দুপুর ১২টায় মাহফিল এবং জোহরের নামাজ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, জুলুস উপলক্ষে নগরজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। নগর ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনাও।
সিএমপির নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, জুলুস চলার সময় নগরের পাঁচলাইশ থানার জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার মাঠ থেকে বিবিরহাট হয়ে মুরাদপুর, মুরাদপুর ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে ডান দিকে মোড় নিয়ে ষোলশহর ২ নম্বর গেট, ষোলশহর ২ নম্বর গেট এলাকা থেকে জিইসি মোড়, লর্ডস ইন হোটেল থেকে ২ নম্বর গেট, মুরাদপুর বামে মোড় নিয়ে বিবির হাট থেকে জামেয়া আহম্মদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণের অভিমুখে চলাচলের কারণে অভিমুখ সড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
এছাড়া নগরের বিবিরহাট, মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, হামজারবাগ, শোলকবহর, মির্জারপুল রোডের মুখ, বায়েজিদ বোস্তামী রোডের মুখ (শেরশাহ মোড়), বেবি সুপার মার্কেট, প্রবর্তক মোড়ের মুখ, জাকির হোসেন রোডের মুখ, গোলপাহাড় রোডের মুখ ও পুনাক মোড়ে রোড ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে ডাইভারশন করা হবে। ফলে এই সময়ে র্যালি অভিমুখে সকল ধরণের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে প্রতিবছরের মত এবারও নগরীর ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিলা মাদ্রাসা থেকে জশনে জুলুস বের হবে। জশনে জুলুস সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য সিএমপির নির্দেশনা সকল প্রকার যানবাহনের চালক ও যাত্রী সাধারণসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে মেনে চলার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য সিএমপির ট্রাফিক উত্তর বিভাগের পক্ষ থেকে নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
এ জুলুস ১৯৭৪ সালে আল্লামা তৈয়্যব শাহ (রহ.) চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লার ভুলোয়ার দিঘীর পাড় থেকে সূচনা করেন। এরপর থেকে আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর ১২ই রবিউল আউয়াল পালিত হয়ে আসছে এ জুলুস।